Wednesday, October 10, 2018

Satellite (স্যাটেলাইট) তো ঘূর্ণয়মান। তাইলে সেটা কিভাবে আমাদের গ্রাউন্ডিং স্টেশন এর সিগনাল রিসিভ করে?

01. স্যাটেলাইট তো ঘূর্ণয়মান। তাইলে সেটা কিভাবে আমাদের গ্রাউন্ডিং স্টেশন এর সিগনাল রিসিভ করে?
উ: অনেকের মনেই এই প্রশ্নটা কাজ করে যে স্যাটেলাইট তো ঘূর্ণয়মান। তাইলে সেটা কিভাবে পৃথিবী থেকে পাঠানো সিগন্যাল রিসিভ করে কিংবা পৃথিবী তার সিগনাল রিসিভ করে। ব্যাপারটা মজার। ধরুণ, আপনি বড় একটা বৃত্ত এবং আপনার বন্ধু একটা ছোট বৃত্ত আকল। কার আকা আগে শেষ হবে?? নিশ্চয়ই বলবেন আপনার বন্ধুর?! কারণ সে ছোট বৃত্ত একেছে। সময় তো কম লাগবেই। যদি প্রশ্ন করা হয় দুইজনেই একই সময়ে আকা শেষ করতে পারবেন??? এটা কি সম্ভব??? হ্যা অবশ্যই সম্ভব। এক্ষেত্রে আপনার আকার গতি বাড়িয়ে দিতে হবে। যেহেতু আপনি বড় বৃত্ত আঁকবেন। একইভাবে স্যাটেলাইট ও পৃথিবীর ঘূর্ণন তালে সমতা আনা হয়। তাই পৃথিবীও নিজ অক্ষকে একবার আবর্তন করতে ২৪ ঘন্টা সময় লাগে এবং স্যাটেলাইট এরও সেই একই সময় লাগে। তাই পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে স্যাটেলাইট কে আপাতদৃষ্টিতে স্থির মনে হয়। তাই কোন সিগন্যাল রিসিভ / ট্রান্সমিশন এ কোন সমস্যা হয়না। তবে মাঝেমধ্যে তালের সমতা হারিয়ে যেতে পারে। তখন স্যাটেলাইট নিজস্ব গ্যাসীয় উদগীরণের মাধ্যমে সেটা মানিয়ে নেয়।

02.স্যাটেলাইট এর জন্য কিভাবে পাওয়ার সরবরাহ করা হয়?
উ: প্রত্যেক স্যাটেলাইটে ৩২০০০ সোলার সেল মাউন্টেড করা থাকে যারা ৫২০ ওয়াট পাওয়ার সরবরাহ করতে পারে এবং ব্যাক আপ হিসেবে থাকে ক্যাডমিয়াম ব্যাটারি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার সোর্স ও মাঝেমাঝে ব্যবহার করা হয়। এর পাওয়ার সিস্টেম প্রসেসকে পৃথিবী থেকে সবসময় মনিটর করা হয়। স্যাটেলাইটে একটি অনবোর্ড কম্পিউটার থাকে যা একে নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন সিস্টেমকে মনিটর করে।

03.স্যাটেলাইট কি কি ডিভাইস নিয়ে গঠিত?
উ: স্যাটেলাইট এর মূল চালিকাশক্তি হল স্যাটেলাইট Transponder যা নিম্নোক্ত ডিভাইস নিয়ে গঠিত :
১) Band Pass Filter
২) Low Noise Amplifier
৩) Frequency Translator
৪) Microwave shift oscillator
৫) Radio Frequency Mixer
৬) Power Amplifier
৭) High Resoluted Camera
৮) Processor with high clock speed
৯) High power Transmitting antenna
১০) High power receiving Antenna

04. আপলিঙ্ক & ডাউনলিঙ্ক কি?
উ: গ্রাউন্ড স্টেশন এন্টেনা থেকে যে ডাটা লিংক / চ্যানেল এর মাধ্যমে ডাটা স্যাটেলাইট এর রিসিভিং এন্টেনায় পৌছায় তাকে আপলিঙ্ক বলে।
আর স্যাটেলাইট এর ট্রান্সমিটিং এন্টেনা থেকে যে চ্যানেল / ডাটা লিঙ্ক এর মাধ্যমে ডাটা গ্রাউন্ড স্টেশন এর এন্টেনায় পৌছায় তাকে ডাউনলিঙ্ক বলে।
জিনিসটা একে অন্যের উলটো। অনেকের হয়তো হিজিবিজি লাগতে পারে। তাদের জন্য একটা উদাহরণ দিই। ধরুন, আপনি আপনার ফ্রেন্ডের দিকে একটা বল ছুড়ে মারবেন। এখন কাজটা সহজ করার জন্য দুজনের মাঝে অন্য একজন ফ্রেন্ড রাখলেন যে আপনার থেকে বলটা ক্যাচ ধরে আপনার বন্ধুকে দিবে। এখন আপনি মাঝের বন্ধুর দিকে বল ছুড়ে দিলেন। আপনাদের লিঙ্ক টা আপলিঙ্ক। এবার মাঝের বন্ধু অপাশের বন্ধুকে বল টা ছুড়ে মারবে। তাদের লিঙ্ক টা ডাউনলিঙ্ক। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

05. স্যাটেলাইট এর বিকল্প প্রযুক্তি কি? কোনটায় সুবিধা বেশি?
স্যাটেলাইট এর বিকল্প প্রযুক্তি হল সাবমেরিন ক্যাবল। সাগরের নিচে পাতানো এই অপটিক্যাল ফাইবার চোখের পলক পড়ার আগেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে ডাটা পৌছে দেয়। সময় পেলে অন্য আরেকদিন এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সুবিধার কথা চিন্তা করলে সাবমেরিন ক্যাবল উত্তম।
কারণ-----
১) ব্যান্ডউইথ অনেক বেশি
২) Guided medium হওয়াতে ডাটা লস কম
৩) Electromagnetic interference নেই
৪) ডাটা পৌছে আলোর দ্রুতিতে যেহেতু ফাইবার based & লেজার / এল ই ডি ব্যবহার করে ডাটা পাঠানো হয়।
এবার অনেকে প্রশ্ন করতে পারে, তাইলে আর স্যাটেলাইট কেন?
কারণ, চাইলেই যখন তখন সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন বসানো সম্ভব নয়। প্রত্যেক দেশকেই আন্তর্জাতিক টেলিফোন সংস্থা থেকে একটি লিমিটেড ব্যান্ডউইথ বেধে দেয়া হয়। তাই সাবমেরিন ক্যাবল এর পাশাপাশি এই স্যাটেলাইট কে ব্যাক আপ হিসেবে রাখা হয়

06. স্যাটেলাইট কি? স্যাটেলাইটের কাজ কি?
পৃথিবীকে প্রদক্ষিণকারী যে কোনো বস্তুই হলো স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ। স্যাটেলাইট দুই ধরনের। ন্যাচারাল স্যাটেলাইট বা প্রাকৃতিক উপগ্রহ এবং আর্টিফিশিয়াল স্যাটেলাইট বা কৃত্তিম উপগ্রহ। চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। চাঁদ ব্যতীত সব উপগ্রহ আর্টিফিশিয়াল স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবী থেকে একটি নির্দিষ্ট দুরত্তে তাদের নিজস্ব কক্ষপথে পৃথিবীর চারিদিকে আবর্তনশীল।পৃথিবীপৃষ্ঠের ম্যাপিং করার জন্য সর্বপ্রথম স্যাটেলাইটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাছাড়া রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির সীমাবদ্ধতা টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়। স্যাটেলাইটের আবিষ্কার এই সকল সমস্যার সমাধান করেছে। তারহীন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ম্যাপিং, ইমেজিং, ফটোগ্রাফি, বৈজ্ঞানিক জরিপ, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এই সবকিছু সম্ভব হয়েছে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির কল্যানে।
07.  বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর জন্ম
kennedy space center
আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিটের কাছে নিজস্ব কৃত্তিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য আবেদন করে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় স্যাটেলাইট ডিজাইনের জন্য ২০১২ সালে যুক্তরাষ্টের প্রতিষ্ঠান ‘স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল’ কে প্রধান পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
স্যাটেলাইট সিস্টেম কিনতে ফ্রান্সের কোম্পানি থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেসের সঙ্গে এক হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকার চুক্তি করে বিটিআরসি। এগুলোকে বলা হয় অরবিটাল স্লট। ২০১৪ সালে  রাশিয়ান সংস্থা ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে অরবিটাল স্লট কেনে বাংলাদেশ। এর অর্থমূল্য ছিল প্রায় ২১৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রকেট উৎক্ষেপণ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এর ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটে করে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ১২ মে বাংলাদেশ সময় রাত ২ টা ১৪ মিনিটে  সফলভাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১  মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
এর আগেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ উৎক্ষেপণের জন্য ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারিখ ঠিক করা হয়। তবে হারিকেন ইরমার কারণে ফ্লোরিডায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হলে তা পিছিয়ে যায়। ২০১৮ সালেও আবহাওয়া সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কয়েক দফা উৎক্ষেপণের তারিখ পিছিয়ে যায়। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর ১২ মে ২০১৮ তারিখ থেকে এটি পরীক্ষামূলক সংকেত পাঠানো শুরু করেছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ নিয়ন্ত্রন করার  জন্য এর মূল গ্রাউন্ড স্টেশনটি নির্মান করা হয়েছে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরে। আর জরুরী প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য রিজার্ভ স্টেশন হিসেবে রাখা হয়েছে রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ার একটি গ্রাউন্ড স্টেশনকে।

No comments:

Post a Comment

Thanks for your comment.

Besic Acknowledge in Electrical

২৫। ১ কিলোগ্রাম কাকে বলে? উত্তর : ফ্রান্সের স্যাভ্রেতে ইন্টারন্যাশনাল ওয়েটস অ্যান্ড মেজারসে রক্ষিত প্লাটিনাম ইরিডিয়াম সংকর ধাতুর তৈরি একটি স...